গোলমরিচ একটি বহুবর্ষজীবী লতানো বীরুৎ জাতীয় উদ্ভিদ। এর ইংরেজি নাম হলো: Black Pepper , গোত্র: Piperaceae , বৈজ্ঞানিক নাম: Piper nigrum ।
লতা ও পাতা দেখতে প্রায় পানেরই মতো। পাতা বৃন্তক, সরল, একান্তর, অনেকটা ডিম্বাকৃতির। এটি সাধারণত পুং-পুষ্পও স্ত্রী –পুষ্প ভিন্ন ভিন্ন উদ্ভিদে জন্মে থাকে। কদাচিৎ সহবাসী। পুষ্প লম্বা স্পাইক মঞ্জরিতে অবস্থিত। ফল গোলাকার। আমাদের দেশে শ্রীমঙ্গলসহ সিলেটের বিভিন্ন অঞ্চলে গোলমরিচের চাষ হয়।
গোলমরিচের ভেষজ গুণ
গোলমরিচ অর্শ, সর্দি , গনরিয়া ও পেট ফাঁপায় উপকারী। এটি রুচিকর, বায়ু, কৃমি ও হৃদরোগনাশক। এটি হজমকারক, মূত্রকর, শোষক, পিত্তরস নিঃসরক ও শ্লেষ্মানাশক।
গোলমরিচের ব্যবহার
অপরিপক্ব শুষ্ক ফলই গোলমরিচ হিসেবে আমরা ব্যবহার করে থাকি। পাকা ফলের বীজ বাজারে সাদা মরিচ হিসেবে পরিচিত।
- কুলেখাড়ার মূল ১০ গ্রাম নিয়ে শুকনা করে তারপর ৪ কাপ পানিতে সেদ্ধ করে ১ কাপ অবশিষ্ট থাকতে নামিয়ে ছেঁকে নিয়ে তারপর সন্ধ্যাবেলা খেতে হবে। এর সাথে একটি গোলমরিচ মুখে লালার সাথে ঘষে কাজলের মতো চোখে ব্যবহার করলে অনিদ্রা রোগ দুর হবে।
- গোলমরিচ চুর্ণ করে সে চুর্ণ এক বা দেড় গ্রাম নিয়ে গরম পানিসহ সকাল বিকাল একরার করে খেলে কোমর বা পাঁজরের ব্যথা বেদনা দূর হয়।
- গোলমরিচ চুর্ণ করে এক বা দেড় গ্রাম নিয়ে সকাল ও বিকেল রোজ দু’বার পানিসহ ২-৩ দিন খেলেই আমাশয় দূর হবে।
- একটু একটু প্র¯্রাব হলে গোলমরিচ ২ গ্রাম বেটে , তার সাথে সামান্য চিনি বা মিছরি মিশিয়ে সরবত করে প্রতিদিন একবার করে খেলে উপকার পাওয়া যায়।
- ছাঁচি পেঁয়াজ অর্থাৎ ছোট পেঁয়াজের রস টাকে ঘষে লাগিয়ে তারপর সৈন্ধব লবণ ও গোলমরিচ একসাথে বেটে টাকে কয়েক দিন ব্যবহার করলেই টাকে চুল গজাবে।
- গোলমরিচ চুর্ণ ৮০০ মিলিগ্রাম মধুর সাথে মিশিয়ে ২-৩ দিন দুই বেলা চেটে খেলে গনরিয়ার উপকার পাওয়া যায়।
- গোলমরিচ বেটে অর্শ ও অন্যান্য চর্মরোগে প্রলেপ দিলে উপকার পাওয়া যায়।
- ঘি, চিনি ও মধুর সাথে গোলমরিচ গুঁড়া বেটে খেলে কাশি রোগ প্রশমিত হয়।
- প্রসূতিকে ঘিয়ের সাথে গোলমরিচ গুঁড়ো খেতে দিলে গায়ের ব্যথা ও সূতিকা দোষ বিনষ্ট হয়ে প্রসূতি সবল ও সুস্থ হয়।
- বিষাক্ত কীটপতঙ্গ কামড় দিলে কামড়ের স্থানে ভিনেগারের সাথে গোলমরিচ বেটে প্রলেপ দিলে ব্যথা প্রশমিত হয়।
- দাঁতব্যথা , মাথাব্যথা, আর্টিকেরিয়া, বাতব্যথা ও প্যারালাইসিস রোগে স্থানীয়ভাবে ব্যবহারে গোলমরিচ বেশ উপকার সাধন করে থাকে।
- ম্যালেরিয়া জ্বরে গোলমরিচ খেলে জ্বরের পুনরাক্রমণের ভয় কমে যায়।
- গোলমরিচ (২৫টা) এবং ১ টি পাথরকুচির পাতা একসাথে বেটে চার ভাগ করে ১০/১৫ মিনিট পর পর সেবন করতে দিলে কলেরার ভেদ ও বমি কম হয়।
- গোলমরিচ, কালোজিরা ও চিনি সমান সমান মাত্রায় নিয়ে একসাথে গুঁড়া করে আধা তোলা মাত্রায় দিনে তিনবার খেলে অ¤øশূল সেরে যায়।
- গোলমরিচ, পিপুল ও শুঁঠ গুঁড়া সমপরিমাণে সিকি তোলা পরিমাণ মধূর সাথে খেলে সর্দি- কাশি সেরে যায়।
- ২৫ টি গোলমরিচের সাথে গিলার শাঁস সিকি তোলা বেটে পানিসহ খেলে শরীরের সর্বপ্রকার ব্যথা দূর হয়।
- গোলমরিচ ২ টি এবং গিলার শাঁস একটি একসাথে বেটে দুই আনা মাত্রায় তিন দিন খেলে বসন্ত রোগ আক্রমণের ভয় থাকে না।
- সামান্য পানির সাথে গোলমরিচ বেটে প্রলেপ দিলে ব্রণ সেরে যায়।
- শুঁঠ ও গোলমরিচ গুঁড়ো এক তোলা এবং মিছরি গুঁড়ো এক তোলা একসাথে মিশিয়ে একটু একটু করে খেলে হাঁপানি রোগ সেরে যায়।
Wow
ReplyDelete