তরমুজের পরিচিতি
তরমুজ গ্রীষ্মকালীন বর্ষজীবী লতানো উদ্ভিদ। এর ইংরেজি নাম:Water Melon ,গোত্র: ,Cucurbitaceae বৈজ্ঞানিক নাম: Citrullus lanatus। এটি মাটির উপর শাখা- প্রশাখা বিস্তার করে। পাতা ডিম্বাকৃতি, মধ্যমভাবে খন্ডিত, মসৃণ অথবা কিছুটা রোমশ। পাতা ৭.৫-২০ সে.মি লম্বা। ফুল হলুদ রঙের। ফলের ব্যাস ২৫ সে.মি উপগোলাকার অথবা উপবৃত্তাকার, মসৃণ, সবুজাভ এবং প্রায়ই মোমের আস্তারণ থাকে। শাঁস রসালো, লাল অথবা হলুদাভ সাদা। এর কান্ড কোণাকার এবং শাখান্বিত। আকর্ষী দ্বিখন্ডিত, শক্ত, রোমশ।
পুষ্টিগুনে তরমুজ
পুষ্টিগুন ফলগুলোর মধ্যে তরমুজ অন্যতম। বিশাল আকৃতির এ ফলটি খাদ্যপ্রাণে ভরপুর। অল্প দামের এ ফল খেলে পাওয়া যায় অনেক সুফল। তরমুজে কোলেস্টেরল নেই। প্রতি ১০০ গ্রাম তরমুজের পুষ্টিমান বিচার করলে দেখা যায় এতে রয়েছে শতকরা ৯৩ ভাগ পানি। আঁশের পরিমান ০.২ গ্রাম , আমিষ ০.৫ গ্রাম, চর্বি ০.২ গ্রাম, ক্যালোরি ১৬ মিলিগ্রাম, ক্যালসিয়াম ১০ মিলিগ্রাম, লৌহ ৭.৯ মিলিগ্রাম, ভিটামিন এ ৫৯০ আই ইউ, ভিটামিন সি ৬ মিলিগ্রাম, ভিটামিন বি১-০.০৪ মিলিগ্রাম এবং ভিটামিন বি২-০.৬ মিলিগ্রাম, কার্বোহাইড্রেট ৩.৫ গ্রাম, খনিজ পদার্থ ০.২ গ্রাম, ফসফরাস ১২ মিলিগ্রাম, নিয়াসিন ০.২ মিলিগ্রাম।
প্রতিদিন ২ কাপের মতো তরমুজ খেলে শরীর ভিটামিন এর চাহিদা পূরণ হয়। ভিটামিন এ ত্বককে ইনফেকশন খেকে রক্ষা করে। তরমুজের ভিটামিন বি৬, ভিটামিন বি১ শরীরে এনার্জি তৈরিতে সাহায্য করে। এর ভিটামিন সি কোলাজেন গঠনে সাহায্য করে। প্রতিদিন দুই কাপ পরিমাণ তরমুজ খেলে শরীরে ৩০ মিলিগ্রাম ভিটামিন সির চাহিদা মেটে। তরমুজে আরও আছে পটাশিয়াম, যা উচ্চরক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে। কিডনিতে পাথর হওয়ার ঝুঁকিও কমায় । পটাশিয়াম শরীরে ফ্লুইড ও মিনারেলসের মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখতে সাহায্য করে। ২ কাপ তরমুজে ৩৫০ মিলিগ্রাম পটাশিয়াম পাওয়া যায়। পরিমাণে কম হলেও তরমুজে সোডিয়াম রয়েছে। এ ছাড়াও আছে থায়ামিন ও ম্যাগনেসিয়াম। অ্যান্টি - অক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ তরমুজ শরীর সতেজ রাখে।
তরমুজের রাসায়নিক উপাদান
তরমুজের বিশেষ কয়েক ধরনের অ্যামাইনো এসিড,নাইট্রিক অক্সাইড তৈরি করে রক্তের স্বাভাবিক কার্যপ্রণালি বজায় রাখে। উচ্চরক্তচাপ স্বাভাবিক থাকে। এতে বিটা ক্যারোটিনের পরিমাণও অনেক। বিটা ক্যারোটিন চোখ ভালো রাখে। তরমুজে লাইকোপেন নামে এক ধরনের খাদ্য উপাদান রয়েছে, যা অন্ত্রের ক্যান্সার ও প্রোস্টেট ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায়। দেহের জন্য ক্ষতিকর অ্যামোনিয়া দেহ থেকে নিষ্কাশনে ভুমিকা পালন করে। আমাদের শরীরে ফ্রি র্যাডিকেলস নামক এক ধরনের পদার্থ রয়েছে, যা দেহের শিরা- উপশিরায় কোলেস্টেরল বা চর্বি জমাতে সাহায্য করে। ফলে হৃৎপিন্ডের রক্তনালিও বন্ধ হয়ে যায়। এতে হার্ট অ্যাটাক বা হৃৎপিন্ড অকেজো হয়ে যায়। ফ্রি র্যাডিকেলসের জন্য অ্যাজমার সমস্যাও হতে পারে। তরমুজ এই ফ্রি র্যাডিকেলসের পরিমাণ কমায়।
তরমুজের ভেষজ গুণ
গরমে শরীর ঠান্ডা রাখতে তরমুজের জুড়ি মেলা ভার। তরমুজের নানা রকম উপকারিতা রয়েছে। তরমুজ খেলে সহজেই পানির পিপাসা মেটে। সবুজ খোসাসহ তরমুজ ক্যান্সার রোগীদের জন্য খুবই আদর্শ খাদ্য। অ্যাজমা, ডায়াবেটিসের মতো রোগের ব্যথা উপশমে তরমুজ সাহায্য করে। তরমুজের বীচি অন্ত্রের জন্য উপকারী। তরমুজ ত্বক ও চুলে পুষ্টি জোগায় । তরমুজ প্র¯্রাবের জ্বালাপোড়া, রক্তশূন্যতা, পেটের আলসার, কোষ্ঠ্যকাঠিন্য , জ্বর-সর্দি -হাঁচি-কাশি কমায় এবং দেহে শক্তি জোগায়। তরমুজের রস ত্বকের ময়লা পরিষ্কার করে, ত্বককে করে উজ্জ্বল, সতেজ।
পাকা তরমুজের রস আধা কাপ নিয়ে তার সাথে ২ বা ৩ টি জিরা গুড়া ও একটু চিনি মিশিয়ে খেলে হৃদরোগ ও পিপাসায় উপকার হয়। আধাপাকা তরমুজের রস ২ চা চমচ পরিমাণে প্রতিদিন ৩ বা ৪ বার খেলে টাইফয়েড জ্বরে উপকার পাওয়া যায়। তরমুজের খোসা ছাড়ানো বীজ ৫-৬ গ্রাম নিয়ে বেটে, ঠান্ডা পানিতে গুলে তাতে একটু চিনি মিশিয়ে খেলে প্র¯্রাব স্বাভাবিক হবে। অপুষ্টিজনিত দুর্বলতা দুর করার জন্য কাঁচা তরমুজের শাঁস টুকরা টুকরা করে কেটে রোদে শুকিয়ে রেখে পরে তাকে চূর্ণ করে ছেঁকে শিশিতে রেখে দিতে হবে। এ চূর্ণ প্রতিদিন ২ চা চামচ নিয়ে ১ কাপ গরম দুধের সাথে মিশিয়ে সকালে ও বিকেলে খেলে অপুষ্টিজনিত দুর্বলতা কাটবে।
ok
ReplyDeleteSir valo
ReplyDeletejana valolaglo
ReplyDeleteNice bro
ReplyDeleteHey dude
ReplyDeleteBad
ReplyDeletegood
ReplyDelete